ঢাকা | শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপে মুস্তাফিজ যেমন...

মশিউর রহমান শাওন
প্রকাশিত: ২১ মে ২০২৩ ২৩:০৫

ছবি সংগৃহীত ছবি সংগৃহীত

মশিউর রহমান শাওনঃ ১৮ জুন ২০১৫! বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের ১১৮ তম সদস্য হিসেবে যাত্রা শুরু হয়েছিল মুস্তাফিজুর রহমানের। এরপর ২০১৯ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের একজন। আর এই আসরে বল হাতে তিনি দলের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। ওভার প্রতি প্রায় ৭ রান খরচ করলেও আসরে নিয়েছিলেন ২০ উইকেট। বৈশ্বিক আসরে সতীর্থদের মধ্যে উইকেট শিকারির বিচারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ফিজ।

নিজের প্রথম বিশ্বকাপে মুস্তাফিজ বল করেছেন ৪৩৩টি বা ৭২.১ ওভার। এসময় তিনি দিয়েছেন ৪৮৪ রান। আসরে রানশূন্য বল করেছেন ১৯৯টি। যা মোট বলের ৪৫.৯৬ শতাংশ। অপরদিকে বাকি ২৩৪ বলে দিয়েছেন এই রান (৪৮৪)। যা মোট বলের ৫৪.০৪ শতাংশ।

আসরে মুস্তাফিজের খরচকৃত ৪৮৪ রানের ৫০.৪২ শতাংশই বাউন্ডারিতে। ৮ ম্যাচে তিনি দিয়েছেন ৪৯ চার (৪০.৫০%) আর ৮ ছয় (৯.৯২%) বাকি ৪৯.৫০ শতাংশ রানের মধ্যে সিংগেল ১৪৪টি (২৯.৭৫ %), ডাবল ৩২টি (১৩.২২%) ও ত্রিপল রয়েছে ১টি (০.৬২%)। এ আসরে অতিরিক্ত খাতে ফিজ রান যোগ করেছেন ২৯। যা মোট রানের ৫.৯৯ শতাংশ। 

একনজরে বিশ্বকাপে ম্যাচ বাই ম্যাচ মুস্তাফিজের বোলিং পারফরম্যান্স......

২ জুন ২০১৯! দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফিজ করেছিলেন ১০ ওভার। ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। ম্যাচে এই পেসার খরচ করেছেন ৬৭ রান। খরুচে হলেও ম্যাচে ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি বল ডট দিয়েছিলেন তিনি। বাকি ৫০ শতাংশ বলে সিংগেল ১৫টি (২২.৩৯%), ডাবল ৭টি (২০.৯০%), চার ৬টি (৩৫.৮২%) ও ছয় ছিল ২টি (১৭.৯২%)। আর অতিরিক্ত দিয়েছিলেন ২ রান (২.৯৮%) ।

 

৫ জুন ২০১৯! নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ। ৭.১ ওভার বল করে ডট দিয়েছিলেন ১৯টি। যা মোট বলের ৪৪.১৯ শতাংশ। বাকি ৫৫.১১ শতাংশ বলে দিয়েছেন ৪৮ রান।

মুস্তাফিজের খরচ করা এই রানের ৫০ শতাংশই ছিল বাউন্ডারিতে। যেখানে ছিল ৬টি চার। এছাড়া সিংগেল ১৫টি (৩১.২৫ রান), ডাবল ৩টি (১২.০৫ রান) ও অতিরিক্ত ৩ রান (৬.২৫%)। ম্যাচে ফিজ ছিলেন উইকেট শূন্য।

 

৮ জুন ২০১৯! বিশ্বকাপে মুস্তাফিজের তৃতীয় ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ ওভারে নিয়েছেন ১ উইকেট। বিপরীতে খরচ করেছেন ৭৫ রান। এই ম্যাচে ফিজ ডট দিয়েছেন ১৯টি। যা মোট বলের ৩৫.১৯ শতাংশ। বাকি ৩৫ বা ৬৪.৮১ শতাংশ বলে দিয়েছেন ৭৫ রান।

ম্যাচে ৭৫ রানের ৪৯.৩৩ শতাংশ খরচ হয়েছে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের স্ট্রাইক রোটেট’র। যেখানে ছিল ১৯ সিংগেল (২৫.৩৩%) ও ৯ ডাবল (২৪%)। অবশিষ্ট রানের ৪১.৩৩ শতাংশ বাউন্ডারিতে। ৪টি বাউন্ডারির (২১.৩৩) পাশাপাশি ওভার বাউন্ডারি ছিল ৩টি (২৪%), আর ৫.৩৩ শতাংশ রান (৪ রান) দিয়েছেন অতিরিক্ত।

 

১৭ জুন ২০১৯! উইন্ডিজের বিপক্ষে মুস্তাফিজ বল করেছেন ৯ ওভার। এদিন উইকেট নিয়েছেন ৩টি। ম্যাচে ডট দিয়েছেন ৪৬.৩০ শতাংশ বা ২৫ বল। বাকি ২৯ বা ৫৩.৭০ শতাংশ বলে ফিজ দিয়েছেন ৫৪ রান।

ম্যাচে মুস্তাফিজের বলে সিংগেল ২০টি (৩৩.৯০%)ও ডাবল ছিল ৪টি (১৩.৫৬%)। এছাড়া ৩৭.২৯ শতাংশ রান দিয়েছেন বাউন্ডারিতে। যেখানে ৪ চার (২৭.১২%) ও ছয় ১টি (১০.১৭%)। ম্যাচে মুস্তাফিজ অতিরিক্ত রান দিয়েছেন ৯ (১৫.২৫%)।

 

২০ জুন ২০১৯! পঞ্চম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খরুচে ছিলেন মুস্তাফিজ। ৯ ওভারে দিয়েছেন ৬৯ রান। এদিন ফিজ ডট দিয়েছেন ৪০.৭৪ শতাংশ বা ২২ বল। মুস্তাফিজের বিপক্ষে ৬৯ রান প্রতিপক্ষ তুলেছিল ৫৯.২৬ শতাংশ বা ৩২ বলে।

ম্যাচটিতে মুস্তাফিজ ৩ উইকেট শিকার করলেও সুবিধা করতে পারেননি। কেননা নিজের কোটায় দেওয়া রানের ৬০.৮৭ শতাংশই প্রতিপক্ষ নিয়েছিল বাউন্ডারি থেকে। যেখানে ছিল ৯ চার (৫২.১৭%), ও একটি ছয় (৮.৭০%)। এছাড়া ১৮ সিংগেল (২৬.০৯%), ডাবল ৪টি (১১.৫৯%)। ১.৪৫ শতাংশ রান (১ রান) তিনি খরচ করেছেন অতিরিক্ত ।

 

২৪ জুন ২০১৯! বিশ্বকাপ নিজের ৬ষ্ঠ ম্যাচে সবচেয়ে কম ইকোনমিতে বোলিং করেছেন মুস্তাফিজ। এদিন ৮ ওভার বল করে নিয়েছেন ২ উইকেট, খরচ করেছিলেন ৩২ রান। ম্যাচে ডট দিয়েছেন ৩১ বা ৬৪.৫৮ শতাংশ বল। বাকি ১৭ বা ৩৫.৪২ শতাংশ বলে রান দেওয়া ফিজ অর্ধেক দিয়েছেন বাউন্ডারিতে।

ম্যাচে আফগান ব্যাটাররা মুস্তাফিজকে ৪টি বাউন্ডারি মেরেছিল। যা মোট রানের ৫০ শতাংশ এছাড়া ১২ সিংগেল (৩৭.৫০%), ডাবল ১টি (৬.২৫%), আর অতিরিক্ত ছিল ২ রান (৬.২৫%)।

 

২ জুলাই ২০১৯! ভারতের বিপক্ষে ১০ ওভার বল করেছিলেন কাটার মাস্টার। এই ম্যাচে ঝুলিতে যোগ করেছেন ৫টি উইকেট। ম্যাচে ৪৮.৩৩ শতাংশ বা ২৯ বল ডট দিলেও খরচ করেছেন আবার ৫৯ রান। অর্থাৎ এই রানও এসেছে ৩১ বা ৫১.৬৭ শতাংশ বল থেকে।

মুস্তাফিজের বিপক্ষে ভারতীয় ব্যাটাররা স্ট্রাইক রোটেট করে নিয়েছে ৫০.৮৪ শতাংশ রান। যেখানে ছিল ২৩ সিংগেল (৩৮.৯৮%), ২ ডাবল (৬.৭৮%), আর এক ত্রিপল (৫.০৮%)। এছাড়া ৪ টি চার (২৭.১২%) ও ছয় ছিল ১টি (১০.১৬%)। ম্যাচে অতিরিক্ত দিয়েছেন ৭ রান (১১.৮৬%)।

 

৫ জুলাই ২০১৯! পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়েছিল বাংলাদেশ ও ফিজের। এদিনও নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। তবে ১০ ওভারের কোটা শেষে দিয়েছেন ৭৫ রান। ম্যাচে ডট দিয়েছেন ২৪ বা ৪০ শতাংশ বল। বাকি ৩৪ বা ৬০ শতাংশ বলে দিয়েছেন এই রান।

পাঁচ উইকেট শিকার করলেও দাপট দেখাতে পারেননি মুস্তাফিজ। তার রানের ৬৪ শতাংশ ছিল বাউন্ডারিতে। প্রতিপক্ষ কোন ওভার বাউন্ডারি নিতে না পারলেও মেরেছে ১২টি চার। বাকি রানের মধ্যে ছিল ২২ সিংগেল (২৯.৩৩%). ২ টি ডাবল (৫.৩৩%), এক ওয়াইড (১.৩৩%) । 

গেল চার বছরে অনেকবার ছন্দ হারিয়েছেন মুস্তাফিজ। ‘মুস্তাফিজ কি অটো চয়েজ’ এমন প্রশ্ন উঠেছে বিদেশ ঘুরে বাংলাদেশেও। খারাপ সময় কাটিয়ে মুস্তাফিজ ফিরলে এই মুস্তাফিজ ভারত বিশ্বকাপে হতে পারেন দুর্দান্ত।

 

বিশ্বকাপে অর্ধেক’র বেশি রান বাউন্ডারিতেই দিয়েছেন মুস্তাফিজ। তার এমন অবস্থা দেখে আপনার মনে পড়তে পারে সৌরভ গাঙ্গুলীর কথা। চলতি আইপিএলে মুস্তাফিজকে নিয়ে বলেছেন, 'মুস্তাফিজের ফিল্ডিং ডিরেকশনে ঘাটতি আছে। কারণ, প্রায় সময়ই দেখা যায় ওর বলে খোঁচা মেরে চার হচ্ছে, ক্যাচ মিস হচ্ছে, এক রানের জায়গায় দুই রান হচ্ছে। কিন্তু ঠিক জায়গায় ফিল্ডিং সাজানো থাকলে এমনটা হতো না। এই দিক দিয়ে তাকে উন্নতি করতেই হবে।'

 

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....

বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!

শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

তাকে সময় দিন, যেন সে হারিয়ে না যায়

‘২০১৬ সালে রিজওয়ানের সাথে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেসময়ে যেহেতু তার বয়স কম ছিল, দু...