৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:৫৮
নট আউট ডেস্কঃ রিংকু সিং নামটা আলোচনায় এসেছিল এর আগেই। তবে, রবিবার রাতের পর হয়তো সবার মুখে মুখেই থাকবে নামটি। বাইশ গজে অসম্ভবকে সম্ভব করা রিংকুর গল্পটা অবশ্য হার মানায় অন্য আট দশটা রুপকথার সিনেমাকেও। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে রিংকু ছিলেন তৃতীয়। বাবা করতেন গ্যাস সিলিন্ডার ডেলিভারির কাজ। যে টাকা রোজগার করতেন তাতে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা ছিল। সেখানে টানাটানির এই সংসারে রিংকুর ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নটা ছিল অনেকটা আকাশকুসুম কল্পনাই।
পড়ালেখায়ও খুব একটা ভালো ছিলেন না রিংকু। একটা সময় তাই রিংকুর ঠিকানায় হয় একজন ঝাড়ুদার হিসেবেই। কিন্তু ঝাড়ুদারের চাকরি করে জীবন শেষ করতে রাজি ছিলেন না রিংকু। হতাশকে পেছনে ফেলে করেছেন অক্লান্ত পরিশ্রম। দিল্লিতে এক টুর্নামেন্টে ঝড় তোলা রিংকু ম্যান অব দ্যা সিরিজ হয়ে পেয়েছিলেন মোটরবাইক। সেটা অবশ্য রিংকু উপহার দিয়েছেন বাবাকেই।
রিংকুর এই পরিশ্রম অবশেষে পূর্ণতা পেয়েছিল ২০১৪ সালে এসে। সেবার উত্তরপ্রদেশের হয়ে লিস্ট-এ ক্রিকেটে অভিষেক হয় রিংকুর। একই বছর হয়ে যায় টি-টোয়েন্টি অভিষেকটাও। বছর দুয়েক বাদে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটেও পদার্পণ হয় তার। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি রিংকু সিংকে।
আইপিএল ২০১৭ তে নিলামে প্রথমবারের মতো রিংকু সিংকে ১০ লাখ ভারতীয় টাকায় দলে ভেড়ায় কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। যদিও সেবার একটার বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। পরের বছরই রিংকুর নতুন ঠিকানা হয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। ৮০ লাখ ভারতীয় টাকায় কেকেআর তাকে দলে নিলেও খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি।
পরের বছরও কলকাতা রিংকু সিংকে করে রির্টান। এরপর কলকাতার স্কোয়াডে নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেন রিংকু। ম্যাচ খেলার খুব একটা সুযোগ না হয়ে উঠলেও, অফ-সিজনে কেকেআরের একাডেমিতে নিজেকে প্রস্তুত করেন রিংকু। গেলবার আইপিএলের মেগা নিলামে ফের রিংকু সিংকে দলে ভেড়ায় কলকাতা।
উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেখাতে না পারলেও চলতি আইপিএলে শুরুর একাদশে ছিলেন রিংকু। পাঞ্জাবের বিপক্ষে কলকাতার প্রথম ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩ বলে ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে, ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে দলের জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
এরপর রবিবার গুজরাটের বিপক্ষে যা করে দেখালেন রিংকু, তা যেন রীতিমতো অবিশ্বাস্যই ছিল। গুজরাটের দেওয়া ২০৫ রানের টার্গেটে একটা সময় জয়টা সম্ভবই মনে হচ্ছিল কলকাতার। কিন্তু ১৬ তম ওভারের প্রথম তিন বলে পর পর তিন উইকেট (রাসেল, নারিন, শার্দুল) নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন রশিদ খান। তাতেই ম্যাচে ফিরে আসে গুজরাট। শেষ ওভারে কলকাতার প্রয়োজন পড়ে ২৯ রান। যশ দয়ালের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন উমেশ যাদব।
তাতেই কলকাতার জয়ের জন্য সমীকরণ দাঁড়ায় ৫ বলে ২৮ রান। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ ওভারে এত রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল না এর আগে কারোই। প্রথমটা ওয়াইডিশ লং অফে, পরেরটা ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ফ্লিক। পরেরটায় আবার ফুলটস, ঠিকানা সেই লং অফেই। চার নম্বরটা ছিল দয়ায়ের ব্যাক অফ দ্য হ্যান্ড স্লোয়ার, শর্ট অফ লেংথ, ক্রস ব্যাটেড একটা ফ্ল্যাট শটে রিংকুু এবার পাঠালেন লং অন দিয়ে। আর শেষটা তো টেনে এনে একই ঠিকানায় পাঠানো।
৬, ৬, ৬, ৬, ৬— টানা পাঁচ ছয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করে ইতিহাস গড়ে বসলেন অখ্যাত এক ক্রিকেটার। শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি। হয়তো রিংকু নিজেও ভাবছেন, এমন এক অবিশ্বাস্য কীর্তি সত্যিই তিনি করে বসে আছেন! এইতো গতবছর ও যাকে নিয়ে হয়েছে এতো ট্রল, এতো এতো সমালোচনা। সেই রিংকু সিং কিনা ঘটিয়ে ফেললেন মস্ত বড় এক কাণ্ড। সমালোচনায় নয় বরং নামটি বোধহয় এবার আলোচনাতে রাখাই যায়!
-নট আউট/টিএ
তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....
বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...
৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!
শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।
এবার মাদিবার রাষ্ট্রে হোক সাম্রাজ্য উদ্ধার
২০২০ সালের পরের ব্যাচ ট্রফি ধরে রাখার কাজটি করতে পারেনি। তবে এবার সাম্রাজ্য উদ্ধারের...
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: