ঢাকা | বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটারদের কষ্ট শুধুই তাদের!

মশিউর রহমান শাওন
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২২ ২০:০৮

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ফাইল ছবি। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ফাইল ছবি।

শুধুমাত্র ক্রিকেট নয় পৃথিবীতে বিদ্যমান প্রতিটি খেলার সাথে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সু-আলোচনার সাথে কু-আলোচনা অর্থ্যাৎ সমালোচনা জড়িত৷ এটিই স্বাভাবিক এটিই নির্মম বাস্তবতা৷ তবে আপাতত বাকি সবকিছু এক প্রান্তে রেখে আলোচনা করা যাক ক্রিকেট নিয়েই৷ যে কয়েকটি দেশ ক্রিকেট খেলে তাদের মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশকে নিয়ে করা যাক আজকের গল্প৷

দেশের ক্রিকেট এগিয়ে যাচ্ছে দারুণভাবেই৷ লাল সবুজের পতাকার প্রতিনিধিত্ব করা মানুষগুলো নিরলস পরিশ্রম করে যায় প্রিয় মাতৃভূমির সম্মান বহিঃবিশ্বে তুলে ধরতে৷ তাইতো বিদেশের মাটিতে নিজ জাতীয় সংঙ্গীত বেজে উঠতেই চোখ থেকে বেড়িয়ে আসে এক পশলা বৃষ্টি৷ যেটিতে মিশে থাকে প্রাপ্তির কিছু৷ সফল হলে তাদেরকে খেলা প্রিয় জাতি তুলে রাখে মাথায় আবার সামান্য ব্যর্থতায় শুরু হয় অগঠনমূলক সমালোচনা। কেউ সম্মানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খেলোয়াড়কে অসম্মান করতে শুরু করে ডিসকাউন্ট প্রথা৷ দিন শেষে তারাও মানুষ, তাদেরও ভালো-লাগা খারাপ লাগা রয়েছে৷

এবার বাংলাদেশকে এক পার্শ্বে রেখে বিশ্ব ক্রিকেটের দিকে সামান্য তাকানো যাক৷ খেলোয়াড়দের খারাপ সময় আসেনি তর্কের খাতিরে এমন উদাহারণ বের করতে নতুন ইতিহাস রচনা করতে হবে৷ ভালো সময়ের সাথে প্রকৃতির নিয়মে খারাপ সময় আসে৷ যথাযথ নিয়মে গঠনমূলক সমালোচনা হয়৷ খুব বেশি দূরে যেতে হবে না পাশের দেশের তারকা কোহলির ব্যাটে শতক নেই শতক ম্যাচ থেকে৷ আলোচনা সমালোচনা থাকলেও নেই অসম্মানের ছিটে ফোঁটা৷

এমন আলোচনায় ফিরে আসা যাক বাংলাদেশ ক্রিকেটে৷ সাধারণ মানুষ যেমন ভালোবাসার মাঝে খারাপ করে বসে ঠিক তেমনি বোর্ড প্রতিনিয়ত যত্ন নেওয়ার পরেও মাঝে মধ্যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে৷ যার খেসারত দিতে হয় প্রতিষ্ঠিত ও সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের৷

খেলোয়াড়দের কষ্ট প্রসঙ্গ শুরু করা যাক তাসকিনকে দিয়েই৷ হারিয়ে গিয়েও ফিরে এসে প্রত্যাবর্তনে ইতিহাস রচনা করা যায় এটি ঘরের ছেলে প্রমাণ করেছে মাদিবার রাষ্ট্রে৷ দেশের অন্যতম সেরা বোলার তাসকিন৷ টানা তিন ফরম্যাটের চাপ মানসিক ভাবে সামলাতে পারলেও শারীরিক ভাবে গ্রহণ করতে পারেননি৷ ছাড়তে হয়েছে সবুজ গালিচা৷ সুসময়ের মাঝে পেতে হচ্ছে নতুন বেগ৷ ফিরে এসে ঝলক কতটা দেখাতে পারবে তা ভবিষ্যতে বলবে৷ তবে বর্তমানে যা বলার তা হলো রঙিন পোষাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত এই তারকাকে৷ বিশ্রাম দিয়ে দিয়ে খেলালে সেরাটা পাওয়া যাবে দীর্ঘসময়৷ নতুবা ফুরিয়ে অপ্রাপ্তির খাতায় নাম লেখাবে, নিষ্ঠুরভাবে বলতে গেলে নাম লেখাতে বাধ্য করবে কর্তারা৷

আরও পড়ুনঃ হেরেই চলছে রোহিতের মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স

দ্বিতীয় প্রসঙ্গে শরিফুলের ইনজুরি বিষয় আলোচনা করাই যায়৷ তাসকিন অভিজ্ঞ৷ শরিফুল শিখছেন৷ খুব একটা বেশি বয়স হয়নি৷ এ সময় এত চাপ দিয়ে তাকে পাগল করা হয়েছে৷ হাসি মুখে সব মেনে নিলেও মন হয়তো বলে ছেড়ে দে মা পালায় বাঁচি৷ পেসারদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইনজুরি ৷ সেই ইনজুরির কারনে খেলা হয়নি আফ্রিকায়৷ চলতি মাসেই কথা আছে সার্জারি কিংবা উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাওয়ার৷ অথচ হুট করেই নেমে পড়েছে ডিপিএল খেলতে৷ সেখানে ভালো বল করলেও ইনজুরিকে গুরুত্ব না দিয়ে তা যত্নসহকারে মেনে নিয়েছে কর্তরা৷ সাথে চোট থাকলেও তাকে খেলানোর স্বপ্ন দেখছে আসন্ন ঘরের মাঠে সিরিজে৷ এই ভাবনার বাস্তবায়ন হলে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে পড়বে তা হলফ করেই বলা যায়৷

গল্পের মাঝেই আসা যাক মুস্তাফিজুর রহমান প্রসঙ্গে৷ তারআগে বলা যাক ব্যর্থতায় ক্রিকেট প্রেমীদের আগ্রাসন থেকে বোর্ড খেলোয়াড়দের আগলে রাখলে ও তারাই মাঝে ফেলে দেয় বিপদে৷ কারনটি নিয়েই করা যাক সামান্য আলোনা৷ মুস্তাফিজ রঙিন পোষাকের ক্যারিয়ার দীর্ঘ করতে খেলতে চাননা টেস্ট ম্যাচ৷ অথচ বিসিবি বস পাপন চায় টেস্ট খেলাতে৷ হয়তো মাঝ্ বসে কেউ বলছে জোড় করে কি মন পাওয়া যায় ৷ ফিজ বোর্ডের কথা শুনতে বাধ্য৷ বোর্ড চাইলে খেলতেই হবে৷ ফিজ যদিও বাহ্যিক হাসিতে মেনে নিয়ে পরবর্তীতে ম্যাচে ভালো করতে না পারে তাহলে দিন শেষে ক্ষতি ফিজের৷ ধারাবাহিক ব্যর্থতায় দল থেকে বাদ পড়লে মন না চাইলেও বাদ পড়ার কষ্ঠ বহন করবেন তিনি৷ এর প্রভাবে যদি বাকি দুই ফরম্যাটে খারাপ করে তাহলে ক্ষতি মূলত কার ৷

বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে অগোছালো যেটি তা হলো এক সাকিব ব্যতীত অন্য কেউ খেলোয়াড় সরাসরি বিশ্রামের কথা মুখ ফুটে বলতে পারেননা। ফলে যেদিন ইনজুরিতে পরেন সেদিনে তাদের বিশ্রাম নেওয়ার ভালো সময়। 

বাংলাদেশের বর্তমান পেসারদের মধ্যে সেরা তাসকিন, মুস্তাফিজ, শরিফুল। এই তিনজনের বাইরে ভরসা করার মত খুব একটা ভালো বোলার নেই তা খোলা চোখেই দেখা যায়। যদি থাকেই তাহলে কেন এই তিনজনকেই টানা তিন ফরম্যাটে খেলাতে হবে। কেনই বা টেস্টের জন্য আলাদা বোলিং লাইন গত বিশ বছরেরও তৈরী হয়নি। দিন শেষে ক্রিকেটাররাও মানুষ। তাদের টানা খেলিয়ে ছয় মাস সুফল পেলে বাকি ছয় মাস তাদের ইনজুরিতে দুঃখে কাটাতে হবে বাংলাদেশকে। তাই সাধারণ মানুষ যেমন অগঠনমূলক সমালোচনা করে তা থেকে বেড়িয়ে আসার পাশাপাশি বিসিবির উচিত হবে আরেকটু যত্নবান হওয়ার।

দলে থাকা খেলোয়াড়দের চিত্র এমন হলেও দল থেকে ছিটকে যাওয়া ক্রিকেটারদের পরিস্থিতি আরও করুণ। অনেকে হারিয়ে যায় চিরতরে। কেউ ফিরে আসার সংগ্রাম করে একা একা। কেউ সঙ্গী হিসেবে পায় বোর্ডকে। 

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....

বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!

শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

তাকে সময় দিন, যেন সে হারিয়ে না যায়

‘২০১৬ সালে রিজওয়ানের সাথে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেসময়ে যেহেতু তার বয়স কম ছিল, দু...