ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

দূর্বল পাইপলাইনে রাজত্ব অসম্ভব 

মশিউর রহমান শাওন
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২২ ২২:০৫

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাইপলাইন যে মোটেও শক্তিশালী নয় এটি সকলের জানা কথা। তর্ক কিংবা যুক্তিকে ভালোবাসে এমন ব্যক্তিও এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিবে এমন কথা। না মেনে নেওয়ার উপায় নেই কারও হাতে। কারন একজন সাকিব না থাকলে এখনো দল সাজাতে দ্বিধায় পড়তে হয় টিম ম্যানেজম্যান্ট থেকে শুরু করে সকলকে। সাকিবের মত খেলোয়াড় তৈরী হয়তো সম্ভব নয়, তবে সাকিবের অবর্তমানে তার কাজ চালিয়ে যাবে এমন খেলোয়াড় তৈরী করা মোটেও কঠিন কাজ নয়। আর যদি বাস্তবিক অর্থে কঠিন হয়ে থাকে তাহলে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখা স্বল্প সময়ে বন্ধ করা উচিত। 

প্রশ্ন উঠতে পারে কেন স্বপ্ন দেখা বন্ধ করতে হবে। তার সহজ ও সাবলীল ‍উত্তর হলো একজন খেলোয়াড় সবসময় দলে থাকবে না। ইনজুরি কিংবা ব্যক্তিগত সমস্যায় বিভিন্ন সময় দলে না পাওয়াটাও স্বাভাবিক বিষয়। তাই শুধুমাত্র সাকিবের উপর নির্ভর করে থাকলে বোকামি ছাড়া মোটেও অন্যকিছু নয়। সাকিবের ক্যারিয়ারও খুব একটা দীর্ঘ নয়। তাই তৈরী করতে হবে শক্তিশালী পাইপলাইন। 

বর্তমান যুগ যতটা চাকচিক্যের তার থেকেও বেশি চাকচিক্য ক্রিকেট মাঠের লড়াই। প্রযুক্তির কল্যাণে একজন বোলার কিংবা একজন ব্যাটারের দূর্বলতা খুজে বের করা মোটেও কঠিন কাজ নয়। তবে এসব ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো রাজত্ব করতে প্রয়োজন শক্তিশালী পাইপলাইন। যা আপতমস্তে নেই বাংলাদেশের। ফলে আকাশ সমান স্বপ্ন থাকলেও তা বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। পঞ্চপান্ডবদের একজন ইতিমধ্যে বিদায় বলেছে তিন ফরম্যাটকে। বাকি চারজনের কেউ টেস্টকে বাই বাই বলেছেন কেউ থেকেও নেই টি-টুয়েন্টিতে আবার কেউ অনিয়মিত আভিজাত্যের ফরম্যাটে।

সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে তামিমের অনুপস্থিতিতে এখনো ওপেনিংয়ে ঘুঁড়ে দাড়াতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। রিয়াদের টেস্টে না থাকার অভাবও পূরণ করার মত খেলোয়াড় প্রতিনিয়ত দেখা যায়না। অপরদিকে ক্রিকেট বিশ্বকে যারা শাসন করছে তাদের দিকে তাকালে দেখা যাবে তাদের পাইপলাইন এতটাই মজবুত কমপক্ষে দুইটি জাতীয় দল তৈরী করা যাবে যারা যে কোন দলের বিপক্ষে কঠিন প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করতে পারবে। খুব বেশিদূর যদি যেতে না হয় তা হলে প্রতিবেশী ভারতের দিকে তাকালেই অনেক কিছু শেখা যাবে। তাদের পাইপলাইন এতটাই মজবুত যে কোন সময় দুই থেকে তিনটি জাতীয় দল তৈরী করা যাবে এবং দলটি বিশ্বকাপ জেতার সামর্থ্য পর্যন্ত রাখবে বলে ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করেন। 

আমাদের স্বপ্ন বিশ্বজয়ের। অথচ এক দুজন খেলায়াড়ের অভাব পূরণ করার মত খেলোয়াড় যেহেতু খুঁজে পাওয়া যায়না সেহেতু আপাতত এমন স্বপ্নকে নিছক কল্পনা হিসেবে ভাবা উচিত হবে। 

টিম টাইগার ক্রিকেটের তিন সংস্করণের মধ্যে একদিনের ক্রিকেটে যতটা উন্নতি করেছে বাকি দুই ফরম্যাটে তার থেকেও বেশি অবনতি হয়েছে এবং তা ধারাবাহিক ভাবে চলমান। প্রতিটি দলের তিন ফরম্যাটে বিশেষ কিছু খেলোয়াড় থাকে যারা দলকে লড়াইয়ের রাস্তা ভালো ভাবে দেখাতে সক্ষম হয়। অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে সবচেয়ে বড় আস্থা পঞ্চপান্ডবদের উপর। কোনভাবে চারজনের একজন না থাকলে যেন ম্যাচ শুরুর আগেই হেরে যায় দলটি। 

আরও পড়ুনঃ ব্যাটার সৌম্যকে ধ্বংস করেছে বোলার সৌম্য

আগামী কয়েক বছর পর সাকিব, তামিম, রিয়াদ, মুশফিক অবসরে যাবেন। ইতিমধ্যে অবসরে গেছেন সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে এখনই সময় তাদের কার্যকারী বিকল্প খুজে বের করার। নতুবা তাদের অবর্তমানে দলের অবস্থা হবে শোচনীয়। বারংবার ব্যর্থতার পরে আত্মবিশ্বাসহীন হলে লড়াই থেকেও হারিয়ে যেতে পারে সম্ভাবনাময় দলটি। 

জাতীয় দল সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে এটিই স্বাভাবিক। তবে তার সাথে সাথে অনাগতদের দিকেও সুনজর দিতে হবে। ঘরোয়া কাঠামো আধুনিকায়ন করতে হবে। আধুনিক যুগে প্রাচীন যুগের পন্থা অবলম্বন করলে তা দেশের ক্রিকেটের জন্যই ক্ষতির। ভবিষ্যত জাতীয় দলের খেলোয়াড় তৈরীতে স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সমান গুরুত্ব দিতে হবে। জাতীয় দল অভিজ্ঞদের জন্য। তাই জাতীয় দলে অভিষেকের পূর্বে বিভিন্ন সফরের মাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞ করে গড়ে তুলতে হবে।

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....

বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!

শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

তাকে সময় দিন, যেন সে হারিয়ে না যায়

‘২০১৬ সালে রিজওয়ানের সাথে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেসময়ে যেহেতু তার বয়স কম ছিল, দু...