‘৭’ উইকেটের দাপুটে জয়ে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ

নট আউট ডেস্কঃ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি হেরে, বাংলাদেশ দলের আত্নবিশ্বাস গিয়ে ঠেকেছিল তলানিতে। ঘুরে দাঁড়ানোর সঙ্গে সিরিজ হার বাঁচাতে জয়ের ছিল না কোন বিকল্প। এমন ম্যাচেই ব্যাটে-বলে দাপট দেখালেন টাইগার ক্রিকেটাররা। তাতেই দুর্দান্ত জয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-১ এ সমতা ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। 

হারারেতে এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে, শুরুতেই টাইগার স্পিনার মোসাদ্দেক সৈকতের ঘূর্ণিতে চোখে সর্ষে ফুল দেখে জিম্বাবুইয়ানরা। বোর্ডে মাত্র ৩১ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় তাঁরা। যার সবকটি উইকেট একাই নেন মোসাদ্দেক। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের দিনে, এদিন চর্তুথ টাইগার বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে পান ৫ উইকেটের দেখা। 

হারারেতে এদিন টস জিতে এ ম্যাচেও ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। বল হাতে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা করেন মোসাদ্দেক সৈকত। আর বোলিংয়ে এসেই করে বসলেন বাজিমাত। শুরুর আধ ঘণ্টায় এই টাইগার স্পিনার আজ যা করলেন, তা স্বয়ং মোসাদ্দেক সৈকত নিজেও হয়তো কখনো কল্পনা করেনি।

এদিন ইনিংসের প্রথম বলেই এই স্পিনার ফেরান জিম্বাবুয়ে ওপেনার চাকাবাকে। ওই ওভারের শেষ বলেই ফেরান আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান মাধভেরেকেও।

শুরুতেই সৈকতের দেওয়া ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের তৃতীয় ও ব্যাক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে ফের সাফল্য পান সৈকত। এবার জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে ফেরান তিনি।

পরের ওভারে এসেই শন উইলিয়ামসকেও তুলে নেন তিনি। এরপর ব্যাক্তিগত চর্তুথ ও শেষ ওভার করতে এসে, ওভারের শেষ বলে তুলে নেন মিল্টন সুম্বার উইকেট। তাতেই দুর্দান্ত ক্যারিয়ার সেরা বোলিংটা করে ফেলেন তিনি। ইলিয়াস সানি, সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের পর চর্তুথ বাংলাদেশী বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচে '৫' উইকেট নেওয়া বোলার এখন তিনি। 

সৈকতের বোলিং তোপে ৩১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। ষষ্ঠ উইকেটে জিম্বাবুয়ের হাল ধরেন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। দু'জন মিলে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়ে, শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন। এরপর শেষ দিকে দু'জনই দ্রুত তুলতে থাকেন রান। এই দু'জনের ব্যাটে চড়েই দলীয় একশ পার করে জিম্বাবুয়ে। 

হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন, আগের দিন বিধ্বংসী হাফ সেঞ্চুরি করা সিকান্দার রাজা। দলীয় ১১১ রানে ব্যাক্তিগত ৩২ রান করা বার্লের বিদায়ে ভাঙে ৮০ রানের এই জোট। এরপর হাফ সেঞ্চুরিয়ান রাজা ফিরেন মুস্তাফিজের শিকার হয়ে। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬২ রান করে ফিরেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে ২০ রানে ৫ উইকেট নেন মোসাদ্দেক সৈকত। 

সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে, উদ্বোধনী জুটিতে ৩৭ রান যোগ করেন মুনিম শাহরিয়ার ও লিটন দাস। ব্যর্থতার বলয় ভাঙতে না পারা ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার এদিনও করেছেন হতাশ। ফিরেছেন ব্যাক্তিগত ৭ রান করে। এরপর লিটন-বিজয়ের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে আরও ৪১ রান। ৩০ বলে দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। এরপরেই ৩৩ বলে ব্যক্তিগত ৫৬ রান (৬ চার ও ২ ছক্কা) করে ফিরেন এই ওপেনার।

৩ রানের ব্যবধানে ১৬ রানে সাজঘরে ফিরেন এনামুল বিজয়ও। তাতেই অবশ্য খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর শান্ত ও আফিফের ব্যাটে দলীয় একশ পার করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৫৫ রানের জুটিতে সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ১৫ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে জয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে বাংলাদেশ। ১টি করে চার ও ছক্কায় ২৮ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত থাকেন আফিফ।

-নট আউট/টিএ