ঢাকা | শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

মমিনুল দোষী, বাকি সবাই অপরাধী

মশিউর রহমান শাওন
প্রকাশিত: ২৫ মে ২০২২ ১০:০১

নেতৃত্বে পরিশ্রান্ত নেতা মুমিনুল হক৷ ছবি সংগৃহীত নেতৃত্বে পরিশ্রান্ত নেতা মুমিনুল হক৷ ছবি সংগৃহীত

মশিউর রহমান শাওন: বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমান সময়ে আলোচনার পুরোটাই নিজেদের করে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস৷ দুই জনেই ধারাবাহিক ভাবে ছিলেন সমালোচিত, বিশ্রামের নামে বাদ পড়তে হয়েছে দল থেকেও৷ একজন আয়না কান্ড আরেকজন শুনেছিলেন ডিসকাউন্ট অফার৷ মুশফিকের বাবার কথা মেনেই বলা যায় আমরা বাঙালি জন্যই সমালোচনা বেশি করি৷ লিটনের ভাষ্যমতে খারাপ খেললে সমালোচনা হবেই৷ মুশফিকের মতামত পরে আলোচনা করলে মোটেও ভুল কিছু হবে না৷

সাহিত্যের কথা ছেড়ে পাঠকদের জন্য আলোচনা করা যাক টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে৷ বাংলাদেশ টেস্টে পিছিয়ে এটি মেনে নেওয়ার হলেও টেস্ট খেলতে পারে না এটি মেনে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই৷ হয়তো বিচ্ছিন্ন পারফরম্যান্স তবুও রয়েছে রেকর্ডবই৷ যেখানের বেশ কিছু পাতায় পিছিয়ে রয়েছে সাবেক গ্রেটদের কেউ কেউ৷ তবুও নিজেদের সংসারে নিজেরা ভুল করলে প্রতিবেশী কটু কথা বলবেই৷ এটি স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নেওয়া শ্রেয়৷ কারন দিন শেষে নিজেদের সংসার নিজেদেরকেই দেখভাল করতে হবে৷

বাংলাদেশের টেস্ট মানে দ্রুত আউট হওয়ার সাথে রিভিউয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে না পারা৷ মাঠের নেতা মুমিনুল ব্যাট হাতে যেমন নেই ছন্দে ঠিক তেমনি সিদ্ধান্তেও ব্যর্থতার পাল্লা ভারি৷ তবে শুধুমাত্র সব দোষ এই কাপ্তানকে দেওয়া কিছুটা অন্যায় সাথে কিছুটা পাপও বটে৷ কি কারনে এমনটি বলা তা সামান্য আলোচনা না করা আরও পাপের৷

মুমিনুলের ব্যাটিং সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকার কথা নয়৷ অফ ফর্মে থাকা মুমিনুল যেমন হাসিমুখে বলেন চিন্তিত নয় তখন ধরে নেওয়া যায় বলার জন্যই বলছে৷ কারন দীর্ঘ সময় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলা ক্রিকেটার যখন রান পাবে না তখন স্বাভাবিকভাবে নিজেই নিজের সাথে যুদ্ধ করে তা নিত্যদিনের চিত্র৷

একজন অধিনায়ক সফল হয় বাকি সকলের সার্বিক সহযোগিতায়৷ রিভিউ সিদ্ধান্তে কখনো একার কিছু করা থাকে না অধিনায়কের৷ বোলিং উইকেট রক্ষকের সাথে খুব কাছে ফিল্ডিং করা সদস্যগুলো যদি সর্বোচ্চ দিতে না পারে তাহলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি৷ তাই শুধুমাত্র রিভিউ প্রসঙ্গে মুমিনুলকে দোষারোপ করা চরম বোকামি৷ এখানেও মুমিনুল দোষী হলে বাকি সবাই অপরাধী৷

ছোট করে কাপ্তানের ব্যাটিং নিয়ে আরেকবার আলোচনা করা যাক৷ সাকিবের উত্তরসূরী হিসেবে দায়িত্বে এসেছিলেন মুমিনুল হক৷ যেই দায়িত্বের শুরু তখন থেকেই ব্যর্থতার পাহাড় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল৷ হাটি হাটি পা পা করে এমন পারফরম্যান্সে নিশ্চিতভাবেই একাদশে সুযোগ পেতেন না যদি হতেন না অধিনায়ক কিংবা থাকতো বিকল্প কেউ৷ খালি চোখে যেখানে পরিস্কার অধিনায়কত্ব নেওয়ার পর থেকেই দেশ সেরা টেস্ট ব্যাটার নিজেকে হারিয়ে খুজছেন তবুও কেন নেতৃত্বের আস্থা রাখছেন ম্যানেজম্যান্ট সেটিও বড় প্রশ্ন৷ হয়তো মুমিনুল গৌধুলি বেলাতে হায়দার আলীর মত বলে উঠেন, 'আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার'৷ ব্যাটিংয়ে সফল হওয়া ব্যাটারকে ভিন্ন দায়িত্বে চাপ দেওয়া নিশ্চই অন্যায়৷

আধুনিক যুগে খুব বড় বিশ্লেষণ করা মোটেও ঠিক নয়৷ তাই ফিরে আসা যাক মুশফিকের কথাতে৷ শতক হাকিয়ে বলেছিলেন, 'খেলতে চাই দেশের হয়ে যতদিন ফিট থাকবো'৷ অভিমান থাকলেও দেশের প্রতি নিবেদন সবসময় রয়েছে তা সকলেই মেনে নিবে৷

মুমিনুল অধিনায়কত্ব ছাড়তে চায় কি না তা তিনিই ভালো জানেন৷ ব্যর্থতা নিয়ে কেউ রাজত্ব ছাড়তে চায় না এটি প্রাচীন যুগ থেকেই চিরন্তন সত্য৷ কিন্তু প্রিয় মাতৃভূমির জন্য সাময়িক অসম্মান খুব বেশি ক্ষতির নয়৷ দেশ সেরা ব্যাটার যে অতিরিক্ত চাপে রয়েছেন তা বুঝতে খুব বেশি ক্রিকেটীয় জ্ঞান রাখার প্রয়োজন হবে না৷ ক্রিকেটের স্বার্থে চিৎকার করে বলতে মন চায় নেতা নয় প্রয়োজন ব্যাটার মুমিনুল৷

 

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....

বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!

শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

তাকে সময় দিন, যেন সে হারিয়ে না যায়

‘২০১৬ সালে রিজওয়ানের সাথে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেসময়ে যেহেতু তার বয়স কম ছিল, দু...