নট আউট ডেস্কঃ সিরিজ নির্ধারনী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। হারারেতে এদিন রায়ান বার্লের বিধ্বংসী হাফ সেঞ্চুরিতে ১৫৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে জিম্বাবুয়ে। জবাবে বোলাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বাংলাদেশকে ১৪৬ রানে আটকে দেয় জিম্বাবুয়ে। ফলে ১০ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। এই জয়ে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মত বাংলাদেশকে সিরিজ হারাল জিম্বাবুয়ে। 

জিম্বাবুয়ের করা ১৫৬ রানের জবাবে, ২৩ রানের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। ৬ বলে ১৩ রানে বিদায়ের পর, অভিষিক্ত পারভেজ ইমন ফিরেন ৬ বলে ২ রান করে। এই দুই ওপেনারকেই ফেরান জিম্বাবুয়ে পেসার ভিক্টর নিয়াউচি। ব্যর্থতার বলয় ভাঙতে না পারা এনামুল বিজয় ফিরেন ব্যাক্তিগত ১৪ রান করে।১৬ রান করা শান্তকে ফেরান শন উইলিয়ামস। 

৬০ রানের মধ্যেই বাংলাদেশের টপ অর্ডারের চার ব্যাটারকে তুলে, ম্যাচের নিয়ন্ত্রিত নিয়ে নেয় জিম্বাবুয়ে। এরপর আফিফকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে এই দু'জনের ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিংয়ে ক্রমশ ম্যাচ থেকে দূরে সরে যায় বাংলাদেশ। এরপর বাংলাদেশ শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন জিম্বাবুয়ে পেসার ব্র্যাড ইভান্স।

দলীয় ৯৯ রানের মাথায় পরপর দুই বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২৭ বলে ২৭) ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক সৈকতের (০) উইকেট তুলে নেন তিনি। কার্যত সেখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। এরপর আফিফ হোসেন ও শেখ মেহেদী চালান ব্যর্থ চেষ্টা। ১৭ বলে ২২ রান করা শেখ মেহেদী বিদায় নিলে উৎসব শুরু হয় হারারে স্পোর্টস গ্রাউন্ডে। জয়ের জন্য শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৯ রান।

লুক জঙ্গের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেটা টপকাতে ব্যর্থ হন আফিফরা। তাতেই ১০ রানের জয়ে রেকর্ড গড়ে জিম্বাবুয়ে। ৩ চারে ২৭ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ হোসেন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন ভিক্টর নিয়াউচি। ব্র্যাড ইভান্সের শিকার ২ উইকেট।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে, আক্রমনাত্মক শুরু করেন দুই জিম্বাবুইয়ান ওপেনার চাকাভা ও ক্রেইগ আরভিন। তবে ভয়ংকর হয়ে উঠার আগেই ১৭ রান করা চাকাভাকে সাজঘরে ফেরান নাসুম আহমেদ। এরপর দলীয় পঞ্চাশ পার করার আগেই, জিম্বাবুয়ে শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান। তাতেই সাজঘরে ফিরেন মাধভেরে ও ইনফর্ম সিকান্দার রাজা। 

দলীয় পঞ্চাশ পার করতেই ফের জোড়া উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। এবার দৃশ্যপটে অধিনায়ক মোসাদ্দেক সৈকত ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২ রান করা শন উইলিয়ামসকে ফেরান সৈকত আর জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন (২৪) ফিরেন রিয়াদের শিকার হয়ে। এরপর টাইগার স্পিনারদের উইকেট উৎসবে সামিল হন পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও। ৪ রান করা মিল্টন শুম্ভাকে এনামুলের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করে ফেরান তিনি।

৬৬ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকতে থাকে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। এরপর দলের হাল ধরেন রায়ান বার্ল ও লুক জঙ্গে। ইনিংসের ১৪তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকেই রাখে টাইগার বোলাররা। তবে এরপরেই বদলে যায় পুরো ম্যাচের দৃশ্যপট। ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে এসে, ওভারের প্রথম চার বলেই রায়ান বার্লের কাছে চারটি ছক্কা খেয়ে বসেন নাসুম। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি দেওয়ার, ৬ষ্ঠ বলে ফের ওভার বাউন্ডারি দিয়ে বসেন নাসুম।

এই টাইগার স্পিনারের এক ওভারেই ৩৪ রান তুলে, জিম্বাবুয়েকে লড়াইয়ে ফেরান রায়ান বার্ল। এরপর ২৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।  লুক জঙ্গে ও রায়ান বার্লের পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটিতে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পেয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান তুলে তারা। ২ চার ও ৬ ছক্কায় ২৮ বলে ৫৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন বার্ল। ৪ চার ও ২ ছক্কায় ২০ বলে লুক জঙ্গের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষে শেখ মেহেদী ও হাসান মাহমুদ নেন ২টি করে উইকেট। 

-নট আউট/টিএ