ঢাকা | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব

সিংহাসন হারালেও পরিসংখ্যানে মাহমুদউল্লাহই সেরা

মশিউর রহমান শাওন
প্রকাশিত: ২৪ জুলাই ২০২২ ০০:৪২

টি-টোয়েন্টি অধিনায়করা৷ ফাইল ছবি টি-টোয়েন্টি অধিনায়করা৷ ফাইল ছবি

মশিউর রহমান শাওন: গেল বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় যেমন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্ব ক্যারিয়ারে বড় সফলতা তেমনি প্রাপ্তির। যদিও জয়গুলো নিয়ে সমালোচনা হয় এখনো সুযোগ বুঝে, তবুও ব্যর্থতা যেমন ব্যর্থতাই, প্রাপ্তি তো প্রাপ্তিই বটে। গেলবছর মরুর বুকে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পর্যায়ের খারাপ পারফর্মেন্স এবং পরবর্তীতে নিজের এবং পরের মাঠে খেলা মোট ৮ ম্যাচে রিয়াদের নেতৃত্বে সুখকর কিছুই করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। রিয়াদ যেমন ব্যাট হাতে নিংড়ে দিতে পারেনি তেমনি এই সময়ে দলের অন্যরাও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি খুব একটা। স্বাভাবিক ও যৌক্তিক কারনে দ্বায়ভার নিতে হয়েছে নেতা রিয়াদকেই। সর্বশেষ উইন্ডিজ সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের পর বাংলার আকাশে ডানা মেলেছিল রিয়াদের নেতৃত্ব হারানোর গুঞ্জন। শেষ অবধি হয়েছে তাই। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে বিশ্রামে রাখা হয়েছে তাকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে ৮ম খেলোয়াড় হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দায়িত্ব পেয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। এর আগের ৭ জনের মধ্যে পরিসংখ্যানে অবশ্য সবার সেরাই সদ্য নেতৃত্ব হারানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। একনজরে দেখে নেয়া যাক বাংলাদেশ অধিনায়কদের নেতৃত্বের পরিসংখ্যান।

শাহরিয়ার নাফিসঃ বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে নেতৃত্বের তালিকায় সবার প্রথমে রয়েছে বামহাতি ব্যাটার শাহরিয়ার নাফিসের নাম। ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর টিম টাইগার্স খেলেছিল প্রথম কুড়ি ওভারে ম্যাচ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে টস করতে নেমেছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। ক্যারিয়ারে ঐ একটি ম্যাচেই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যেটিতে দল জিতেছিল ৪৩ রানে। তার অধীনে জয়ের হার ১০০ শতাংশ।

মোহাম্মদ আশরাফুলঃ লাল-সবুজের বাংলাদেশ ক্রিকেটে সেসময় আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম বুলবুল, হাবিবুল বাশার, মোহাম্মাদ রফিকসহ এমন আরও বেশ কয়জন তারকা ক্রিকেটার থাকলেও দেশের ক্রিকেটের প্রথম মহাতারকা হিসেবে সমধিক পরিচিত মোহাম্মদ আশরাফুল। এই ডানহাতি ব্যাটার ছিলেন টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় অধিনায়ক। আশরাফুলের অধীনে বাংলাদেশ দল প্রায় তিন বছরে খেলেছে মোট ১১টি ম্যাচ। যেখানে জয় এসেছে ২টি এবং পরাজয় ৯টিতে। ম্যাচ জয়ের শতাংশ ছিল ১৮.১৮।

সাকিব আল হাসানঃ বিশ্বসেরা সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল প্রতিপক্ষের সাথে বাইশ গজে লড়েছে ২১ বার। যেখানে হাসি মুখে মাঠ ছেড়েছে ৭ বার। অর্থাৎ দল জয় পেয়েছে ৭ ম্যাচে। অপরদিকে পরাজয়ের সংখ্যা ১৪ ম্যাচে। অধিনায়ক হিসেবে ৩৩.৩৩ শতাংশ ম্যাচ জিতেছে সাকিব আল হাসান।

মুশফিকুর রহিমঃ বাংলাদেশর চতুর্থ টি-টোয়েন্টি নেতা মুশফিকুর রহিম। মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত এই ব্যাটার বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে ২৩ ম্যাচে। যেখানে ৩৩.৩৬ শতাংশ জয়ে ম্যাচ জিতেছে ৮টি এবং হেরেছে ১৪ ম্যাচে। একটি ম্যাচ ছিল ফলশূন্য।

মাশরাফি বিন মর্তুজাঃ চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকার পরেও খেলা চালিয়ে যাওয়া মাশরাফি বিন মর্তুজার সময়ে বাংলাদেশ দল খেলেছে ২৮টি টি-টোয়েন্টি। যেখানে ম্যাচ জয়ের সংখ্যা ১০ এবং পরাজয়ের সংখ্যা ১৭। একটি ম্যাচে হয়নি কোন ফল। মাশরাফির নেতৃত্বে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ জয়ের হার ৩৭.০৩ শতাংশ ।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদঃ বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাইলেন্ট কিলার কিংবা নিরব ঘাতক খ্যাত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অধীনে ধুকতে থাকা ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছে দল। এই ডানহাতি ব্যাাটারের লিড দেওয়া ৪৩ ম্যাচে জয় সংখ্যা ১৬টি। বাকি ২৭ ম্যাচের মধ্যে ২৬টিতে পরাজয় এবং একটি ম্যাচ ছিল ফলশূন্য। তার অধীনে ম্যাচ জয়ের হার ৩৮.০৯ শতাংশ।

লিটন কুমার দাসঃ পঞ্চপান্ডব উপাধি চালু হওয়ার পরে এই গ্রুপের সদস্য অর্থাৎ মাশরাফি, তামিম, সাকিব, রিয়াদ ও মুশফিককে ছাড়াই প্রথমবার প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করা দলটির অধিনায়ক ছিলেন লিটন কুমার দাস। মূলত ২০২১ সালের নিউজিল্যান্ড সিরিজে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে রিয়াদের ইনজুরিতে নেতৃত্ব সামলাতে হয়েছিল লিটনকে। এখন পর্যন্ত কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ঐ একটি ম্যাচেই এই উইকেট রক্ষক ব্যাটার নেতৃত্ব দিয়েছেন। যে ম্যাচে বাংলাদেশ গুটিয়ে গিয়েছিল ৭৬ রানে। পরাজয় ছিল ৬৫ রানের।

বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে খুব একটা শক্ত প্রতিপক্ষ নয়। যদিও পথচলা প্রায় ১৬ বছরের। অতীতে হয়নি বলে ভবিষ্যতেও হবে না এমনটিও নয়। সোহানের নেতৃত্ব সুখকর হোক। সকলের কার্যকর ভূমিকায় পারে বাংলাদেশকে এই ফরম্যাটে এগিয়ে নিতে।

 

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

তিন পান্ডবের পাঁচ সেঞ্চুরি, ইমপ্যাক্টে এগিয়ে.....

বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলা সাকিবের রান ১১৪৬৷ ২৯ ম্যাচে মুশফিকের ৮৭৭ রান৷ এই রান নিয়ে রয়ে...

৬, ৬, ৬, ৬, ৬—‘রিংকু সিং’ হ্যাভ ডান ইট!

শেষ ওভারে এমন খুনে ব্যাটিং এর আগে কেউ দেখেনি বোধহয়।

তাকে সময় দিন, যেন সে হারিয়ে না যায়

‘২০১৬ সালে রিজওয়ানের সাথে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেছিলাম। সেসময়ে যেহেতু তার বয়স কম ছিল, দু...