ঢাকা | শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সমালোচনার ভিড়েও সমর্থন পাচ্ছেন মুমিনুল

নট আউট ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২২ ০১:১৬

বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক৷ ফাইল ছবি৷ বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক৷ ফাইল ছবি৷

টেস্টে অধিনায়কত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না মুমিনুল হক। সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞায় তার কাঁধে আচমকা চলে আসে দায়িত্ব। ‘না’ বলার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। চ্যালেঞ্জ নিলেন। কিন্তু বারবার খেয়েছেন ধাক্কা। কখনো কখনো সাফল্যে উদ্ভাসিত করেছেন। নিউ জিল্যান্ডের মতো প্রতিকূল কন্ডিশনে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন।

কিন্তু সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পাল্লা যেখানে ভারী, সেখানে ওঠে নানাবিধ প্রশ্ন। সামর্থ্যের পাশে পড়ে প্রশ্নবোধক চিহ্ন। সঙ্গে যোগ হয়েছে অপেশাদারিত্ব আচরণ! দলকে বাঁচাতে উদ্ভট সব ব্যাখ্যা।

চুপচাপ শান্ত প্রকৃতির ছেলে মুমিনুল। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পছন্দ করেন। পছন্দ করেন আড়ালে থাকতে। কিন্তু তার হাতেই এখন বাংলাদেশ টেস্ট দলের দায়িত্ব। মুমিনুল হক যেদিন অধিনায়কত্ব পেয়েছেন, সেদিন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘কালো রাত’।

আইসিসি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরপরই বিসিবি নতুন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুলের নাম ঘোষণা করে। অভিনন্দন বার্তায় তার মুঠোফোন সেদিন ভরে যায়নি। কিন্তু অধিনায়কত্বে নামার আগে মুমিনুল অনুভব করছেন অধিনায়কত্বের অনুভূতি।

দুই বছরেরও বেশি সময় পর অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুল নিজেকে কেমন মূল্যায়ন করছেন জানতে চাইলে বলেছেন, ‘পুরো বিষয়টি দৃঢ় মানসিকতা। আপনি যদি মানসিকভাবে শক্ত হতে পারেন তাহলে বুঝবেন আপনি নিজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পেরেছেন। আমি ঠিক সেভাবেই গ্রো-আপ হচ্ছি।’

টেস্টে মুমিনুলের সাফল্য বলতে নিউ জিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইতে ম্যাচ জয়, শ্রীলঙ্কার মাটিতে টেস্ট ড্র এবং জিম্বাবুয়েতে গিয়ে ম্যাচ জয়। এর বাইরে ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ হারের ব্যর্থতা তো রয়েছেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টে বাজেভাবে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা এখনও তরতাজা।

দুই টেস্টে মুমিনুলের অফফর্ম, দল পরিচালনায় ঘাটতি ফুটে উঠেছে প্রবলভাবে। তার নেতৃত্বগুণ নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। তবে বোর্ড তার ওপর আস্থা হারাচ্ছেন না। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার, সাবেক ক্রিকেটাররা তার ওপর রেখেছে আস্থা।

বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, বোর্ড অধিনায়ক পরিবর্তনের ব্যাপারে ভাবছে না। তিনি বলেন, ‘অধিনায়কত্ব বদলের কোনো চিন্তা নেই।’


সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বলেছেন, ‘মুমিনুলকে সময় দিতে হবে। ওর আন্ডারে দল খারাপ করছে না। হ্যাঁ দল কঠিন সময়ে যাচ্ছে। পারফরম্যান্স হয়তো আসছে না। কিন্তু্ এর মানে এই নয় যে মুমিনুলের সব কিছু খারাপ হচ্ছে। মনে রাখতে হবে নিউ জিল্যান্ডের মতো কঠিন কন্ডিশনে গিয়ে বাংলাদেশকে টেস্ট জিতিয়েছে। অবশ্যই তার এবং দলের সেই সামর্থ্য আছে বড় কিছু করার।‘

মাঠে মুমিনুলের অনেক সিদ্ধান্তের মত কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না তার ব্যাটও। অধিনায়কত্বে মুমিনুলের পারফরম্যান্সে বড় প্রভাব পড়েছে। ব্যাটিংয়ে তেমন রানও পাচ্ছেন না। অধিনায়ক হিসেবে ১৫ ম্যাচে মুমিনুলের রান ৯০১। ব্যাটিং গড় ৩৪.৬৫। পেয়েছেন ৩ সেঞ্চুরি। অধিনায়কত্বের আগে ৩৬ টেস্টে ৪১.৪৭ গড়ে রান করেছেন ২৬১৩। সেঞ্চুরি আছে ৮টি।


আরেক সাবেক ক্রিকেট খালেদ মাসুদ পাইলট বিশ্বাস করেন, এই ব্যাডপ্যাচ থেকে মুমিনুল অচিরেই বেরিয়ে আসবেন, ‘মুমিনুল খুব প্রতিভাবান ক্রিকেটার। ওর সামর্থ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশের যে কয়েকজন ক্রিকেটার টেস্ট উপভোগ করে মুমিনুল তাদের মধ্যে অন্যতম। তাই তাকে ছুড়ে ফেলা (অধিনায়ক হিসেবেও) উচিৎ হবে না। বিসিবি তাকে সময় দিচ্ছে। আমার মতে সবাইকে সময় দেওয়া উচিত। আশা করছি দ্রুতই সে তার সেরা জায়গায় ফিরবে।’

দল হারলে অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নগুলো উঠে আসে। এই যেমন, আপনার দলে যারা আছেন তারা কি টেস্ট খেলতে জানেন? যে কোনো অধিনায়কের জন্য এমন প্রশ্ন শোনা কষ্টকর। অধিনায়ক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেবেন, নিজেও রান করবেন, সতীর্থদের থেকে পারফরম্যান্স আদায় করবেন, এতটুকুই তো কাজ। কিন্তু মুমিনুলের হচ্ছে না কিছুই। এজন্য অধিনায়ক হিসেবে বেশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছেন তিনি। মুমিনুলের বিশ্বাস এ আঁধার কাটিয়ে আলোর দেখা পাবেন, ‘আমরা যখন আবার একটু ভালো অবস্থানে যাব, তখন দেখবেন আবার মোটামুটি সব ঠিক হয়ে যাবে।

-নট আউট/এমআরএস



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

এই বিভাগের জনপ্রিয় খবর

প্রথম ওয়ানডেতে হোঁচট খেল বিসিবি একাদশ

ভারতের এমএ চিরাম্বরম স্টেডিয়ামে সোমবার প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল তামিলনাড়ু ক্রিক...

ভারত সিরিজের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ে সফরের দল থেকে বাদ পড়েছেন মোসাদ্দেক সৈকত, শরিফুল ইসলাম ও তাইজুল ইসলাম।

জয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে হেরে গেল বাংলাদেশ

৭৪ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রানের টার্গেটেই কঠিন বানিয়ে ফেলে ভারত।